নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যদের হাতে আটকের তিনদিন পর আইন শিক্ষানবিশ রেজাউল করিমের (৩০) মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনা বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রেজাউল করিমের বাবার করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (৩ মার্চ) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো.সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ‘বরিশালের আদালত এ ঘটনা পুলিশকে (পিবিআই) তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আজ হাইকোর্ট বিভাগ সেটি বদল করে বরিশালের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে এ ঘটনার বিচারিক তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ এখন পুলিশের বদলে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে। ’ গত ৫ জানুয়ারি রেজাউল করিম পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগে ডিবি উপপরিদর্শক মহিউদ্দিন আহমেদকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়। বরিশাল মহানগর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন রেজাউল করিমের বাবা ইউনুস মুনশি। রেজাউলের বাবার করা অভিযোগে বলা হয়, ‘২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে বরিশাল নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের হামিদ খান সড়কের একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে রেজাউল করিমকে আটক করেন এসআই মহিউদ্দিন আহমেদ। এরপর রেজাউলের কাছে দু’জন মাদক ব্যবসায়ীর নাম জানতে চান এসআই মহিউদ্দিন। কিন্তু রেজাউল নাম জানেন না বলে জানালে তাকে ধরে নিয়ে যান। রেজাউলের পকেটে নেশাজাতীয় ইনজেকশন পাওয়া গেছে, এ অভিযোগে তাকে আটক দেখানো হয়। এরপর রেজাউলের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পরে আহত রেজাউলকে থানার মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ১ জানুয়ারি বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২ জানুয়ারি রাতে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ’ আদালত অভিযোগটি তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। এ অবস্থায় বিচারিক তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন রেজাউলের বাবা ইউনুস মুনশি। হাইকোর্টে আবেদনের পর ৮ ফেব্রুয়রি আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। আর তদন্তের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। তাই বাদীর ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে বিচারিক তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে এ আবেদন করা হয়েছে। ’
Leave a Reply